ভারতবর্ষ বিভাজনের পর ১৯৪৭ সালের ৩০ নভেম্বর সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপো (কেন্দ্রীয় ঔষধাগার) কলকাতা হতে প্রথমে নারায়ণগঞ্জের বন্দর সংলগ্ন জেটিতে স্থানান্তরিত হয়। পরবর্তীতে ২৭ ডিসেম্বর ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে জয়কালী মন্দির থেকে ইডেন বিল্ডিং তথা বর্তমান সচিবালয় হয়ে বিশেষত স্থানের উপযুক্ততা ও রেল যোগাযোগের সুবিধা বিবেচনায় সর্বশেষ বর্তমান ঠিকানায় (৩০ শহিদ তাজউদ্দিন আহমদ সরণি, তেজগাঁও, ঢাকা-১২০৮) স্থানান্তরিত হয়। সীমিত চাহিদা এবং স্বল্প কর্মপরিধির নিরিখে সিএমএসডি প্রাথমিকভাবে ক্ষুদ্র পরিসর ও কলেবরে কাজ শুরু করে।
প্রথম দিকে সিএমএসডি মূলত কেবল সরকারি ওষুধের একট ডিপো হিসেবে কাজ আরম্ভ করে। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি স্বল্প কিছু ঔষধ সামগ্রী ক্রয় ও বিতরণ করা আরম্ভ করে। কালক্রমে বর্তমানে সিএমএসডি দেশের সরকারি খাতের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী সকল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিভিন্ন বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যন্ত সকল হাসপাতাল বা চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য বিভিন্ন প্রকারের বিপুল পরিমাণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী, মেডিকেল ও সার্জিক্যাল চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও হাসপাতাল সরঞ্জাম ক্রয়/সংগ্রহ, মজুত, সংরক্ষণ ও বিতরণ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্বের বিবেচনায় বর্তমানে সরকারের KPI (Key Point Installation) তালিকার ১(খ) শ্রেণির বিপরীতে ৩২ নম্বর ক্রমিকে তালিকাভুক্ত আছে। ১৯৮৪ সালে ২০২ টি পদ সম্বলিত সিএমএসডির সংশোধিত জনবল কাঠামো অনুমোদিত হয়।
উত্তরোত্তর ক্রমবর্ধমান কর্মপরিধিতে সিএমএসডি বর্তমানে সারা দেশে বর্তমানে ৩৭ টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিভিন্ন বিশেষায়িত চিকিৎসা ইনস্টিটিউশন, বর্তমানে ২৫০-৩০০ শয্যায় উন্নীত জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক- এ সকল স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের জন্য চিকিৎসা সরঞ্জাম ও হাসপাতাল সামগ্রী ক্রয় করে থাকে। ফলে পূর্বের তুলনায় এখন সিএমএসডির কর্মপরিধি ও কর্মতৎপরতা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সিএমএসডি কর্তৃক ক্রয়কৃত সরঞ্জাম সিএমএসডির নিজস্ব স্টোরেই মজুত ও সংরক্ষণ করে আসছে। বর্তমানে প্রায় ৮ একর আয়তন এলাকায় এবং পাঁচ-তলা বিশিষ্ট অফিস-কাম-স্টোর ভবনের তিন-তলা স্টোরে মালামাল মজুত ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। সিএমএসডি বিভিন্ন বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের (WHO, UNICEF, World Bank, ADB, USAID, JICA, KOICA ইত্যাদি) সাথেও কাজ করে থাকে । বিভিন্ন সময় সরকার বা স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের নির্দেশে এসকল উন্নয়ন সহযোগীদের অধিযাচনের ভিত্তিতেও অনেক ক্রয় কার্যক্রম সম্পাদন করে আসছে।
তাছাড়া ১৯৯৮ সালে Health and Population Sector Programme (HPSP) শুরু হওয়াার পর সকল লাইন ডিরেক্টরের পণ্য-সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য সিএমএসডিকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। জানুয়ারি ২০১৭ হতে জুন ২০২৪ পর্যন্ত মেয়াদে বর্তমান 4th Health, Population and Nutrition Sector Programme (4th HPNSP) এর Procurement, Storage and Supplies Management (PSSM-HS) শীর্ষক Operational Plan (OP) সিএমএসডি বাস্তবায়ন করছে সিএমএসডির পরিচালক একই সাথে PSSM-HS অপারেশনাল প্লানের Line Director (LD) হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।